চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত হওয়ার অভিযোগে যুবলীগকর্মী কফিল উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৮৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন।
গত ১৮ নভেম্বর কফিল উদ্দিন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার শিকার হওয়ার পর শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
কফিল উদ্দিন জানান, তিনি এক সময় আবেগের কারণে ছাত্রলীগের মিছিলে অংশ নিতেন এবং যুবলীগের মিছিলেও যোগ দিতেন। এক সময় যুবলীগের এক বড় নেতার সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন। তবে ছাত্রদের ওপর হামলার পর তিনি ছাত্রদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন এবং আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রতিবাদ করেছেন। তিনি বলেন, “কোনো সুবিধা নেওয়ার জন্য মামলা করিনি।”
এদিকে, কফিল উদ্দিনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় অস্ত্র ও মাদকসহ তিনটি মামলা রয়েছে এবং আনোয়ারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) রয়েছে। তিনি একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেছেন। গত ১০ নভেম্বর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় এক যুবক মো. রাইয়ান ২৭৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন, যেখানে কফিল উদ্দিনকে ২৩ নম্বর আসামি করা হয়। মামলায় প্রধান আসামি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলকে করা হয়।
কফিল উদ্দিন মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, ৪ আগস্ট নিউ মার্কেট এলাকায় মিউনিসিপ্যাল স্কুলের সামনে ছাত্র আন্দোলনের ওপর হামলা চালানো হয়েছিল এবং গুলি ছোড়া হয়েছিল, এতে তিনি আহত হন। ওই হামলায় কফিলের হাতেও আঘাত লাগে এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মামলার বিষয়ে কফিল উদ্দিন বলেন, “আমি ছাত্রদের পক্ষ নিয়ে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম। আমি এক সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের মিছিলে যেতাম কিন্তু ছাত্রদের ওপর হামলার পর আমার বিবেক আমাকে ছাত্রদের পক্ষে দাঁড়াতে বাধ্য করেছে।”
তিনি আরও জানান, “এখন ছাত্রদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। আমি বা রাইয়ান, আমরা দুইজনই একই পরিস্থিতির শিকার। রাইয়ান আমাকে জানেন না এবং আমি তাকে চিনি না।”
কফিল উদ্দিন এর আগে বলেন, “আওয়ামী লীগ আমলে আমি নির্যাতিত হয়েছি, অনেক সময় কারাগারে ছিলাম। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল।”
মামলায় কফিল উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলেও, তিনি নিজেই শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য এই মামলা করেছেন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তাকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন।